রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মতারিখ: একটি দালিলিক পর্যালোচনা

একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের সবার অন্তরেই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি তীব্র ভালোবাসা রয়েছে এবং এটাই ঈমানের দাবি। বিশেষ করে বাঙালি আবেগি মুসলিমদের কাছে রবিউল আউয়াল বিশেষ মাস হিসেবেই ধর্তব্য।
যেদিনটিতে সারওয়ারে কায়েনাত, সারকারে দো-আলম মুহাম্মাদ মুস্তফা আহমাদ মুজতাবা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জন্ম গ্রহণ করেছেন সে দিনটি নিঃসন্দেহে অত্যান্ত খুশি, আবেগ ও ভালোবাসার দিন। কিন্তু ঐ বিলাদাতে শরীফাহর দিনটি আসলে কোন দিন তা আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা উম্মতের কাছে সুস্পষ্ট করেননি। আল্লাহ তা'আলা এই দিনটির ব্যাপারে উম্মতের মাঝে ইখতিলাফ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। নিশ্চয়ই এতে মহান আল্লাহর কোন বিশেষ হিকমত রয়েছে। যেমনটি লাইলাতুল কদরের রাত আসলে কোনদিন তাও আল্লাহ গোপন রেখেছেন এবং কিছু আলামতের কথা তার হাবীব সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র যবান থেকে বের করিয়ে উক্ত রাতটি তালাশ করতে বলেছেন।

কিন্তু আমাদের প্রায় সবাই জানি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মতারিখ ১২ই রবিউল আউয়াল। তা কতটুকু সঠিক? ইতিহাস কি বলে? এ বিষয়ে সালাফদের বক্তব্য কি? চলুন তাহলে দলিল-প্রমানের আলোকে একটু আলোকপাত করা যাক।

★মক্কি, মাদানি, সৌর ও চান্দ্রবর্ষ হিসেবে রাসুলের জন্মতারিখ:

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মতারিখ নিয়ে আলোচনার আগে হিজরি, মক্কি-মাদানি সন, সৌর ও চান্দ্রবর্ষ সম্পর্কে কিছুটা ধারণা থাকা দরকার।

হিজরি সনের প্রবর্তন হয় উমর রাদিআল্লাহু আনহুর খিলাফতকালে ১৭ বা ১৮ হিজরির দিকে।[১] অর্থাৎ, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মের ৭০ বছর পর এবং মদিনায় হিজরতের প্রায় ১৭ বছর পর।[২]

অপরদিকে সৌরবর্ষের গণনা খ্রিষ্টানদের মধ্যে প্রচলিত ছিল। যেহেতু মক্কায় খ্রিষ্টানদের বসবাস ছিল না, তাই মক্কায় সৌরবর্ষের প্রচলনও ছিল না।[৩]

চান্দ্রবর্ষের তারিখেও ছিল সমস্যা। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হিজরতের ২২০ বছর আগে মুশরিকরা বিশুদ্ধ চান্দ্রবর্ষে বিকৃতি সাধন করেছিল। এভাবে তারা হজের সময়ে ও সম্মানিত মাসেও বিকৃতি সাধন করেছিল।[৪] কুরআন মাজিদে একে 'নাসী' (النسى) বলে নিন্দা করা হয়েছে।[৫]

আবার তখনকার সময়ে মক্কায় সুনির্দিষ্ট ও ব্যাপক আকারে কোনো সন প্রচলিত ছিল না। তখন তারা বিশেষ বিশেষ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পূর্বাপর তারিখ হিসাব করত।[৬]

যাই হোক, এ বিকৃতির ফলে মক্কা ও তার আশেপাশের প্রচলিত বর্ষপঞ্জি বিশুদ্ধ থাকেনি। অপরদিকে, মদিনা ও তার আশেপাশের আরব গোত্রগলো বিশুদ্ধ চান্দ্রবর্ষকে বহাল রাখে। এভাবে আরবে একই সময়ে দুই বর্ষপঞ্জির প্রচলন হয়।[৭]

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজে 'নাসী'র প্রথা বিলুপ্ত করেন এবং আরবে পুনরায় বিশুদ্ধ চান্দ্রবর্ষের প্রচলন ঘটে যা আজ অবধি বহাল আছে।

আর তাই যতদিন বিকৃত চান্দ্রবর্ষের প্রচলন ছিল ততদিন সে সময়ের তারিখ নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে গেছে, কেননা আগের যুগের বর্ণনাকারীরা সীরাতের ঘটনাবলি কোথাও মক্কার বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী বর্ণনা করেছেন আর কোথাও মদিনার বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী।[৮]

রাসুল সাল্লাল্লাহু সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম তারিখ নিয়ে মতভেদের কয়েকটি সাধারণ কারণ হল:
  • ১. তার জন্ম হয়েছিল হিজরি সন প্রবর্তনের ৭০ বছর আগে।
  • ২. বিশেষ করে নবিজীর জন্মের সময় তাঁর নবি হওয়ার কথা সেখানের কারও তেমনভাবে জানা ছিল না।
  • ৩. তাঁর (সা.) কোনো সাহাবিও তখন ছিলেন না।
  • ৪. তাঁর (সা.) মা-বাবা ও দাদা শৈশবের আগেই একে একে ইন্তেকাল করেছিলেন।
  • ৫. হয়তো আল্লাহর ইচ্ছা ছিল না উম্মতের কাছে তার জন্মতারিখ সুনির্দিষ্টভাবে সংরক্ষিত থাকুক![৯]

অনেকের সংশয় জাগতে পারে কুরআন-হাদিসে জন্মবৃত্তান্ত ও জন্মতারিখ নেই কেন? তাহলে তো আর কোনো মতভেদ থাকত না। এর জবাবে মাওলানা তাহমীদুল মাওলা হাফি.লিখেছেন,
'নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মের স্থান ও সময়কাল সুবিদিত থাকার পর তার জন্মবৃত্তান্ত বা জন্মতারিখ সুনির্দিষ্টভাবে জানা না থাকলেও নবুওয়তি দায়িত্ব আঞ্জাম দিতে কোনো অসুবিধা ছিল না। তাই নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়ত, তাঁর মর্যাদা ও তাঁর যাবতীয় শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের জন্য জন্মতারিখ জানার কোনো প্রয়োজন নেই। হয়তো এ কারণেই আল্লাহ তায়ালা, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে এবং তাঁর মহান সাহাবিদের কেউই এ বিষয়ে বিশেষ কোনো গুরুত্ব প্রদান করেননি।[১০]
আরেকটি প্রশ্ন জাগতে পারে এটি কি ইসলামি ইতিহাসের দুর্বলতা? এর জবাবে মাওলানা তাহমীদুল মাওলা হাফি. লিখেছেন,
'তাদের কাছেই যদি পাল্টা প্রশ্ন করা হয় যে, দেড় হাজার বছর আগের অন্য কোনো ইতিহাস এরচে ভালো বা এর মতো করেই আছে প্রমাণ দেখাতে পারবেন? তাহলে এর উত্তরে নীরবতা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না!'[১১]
উপরন্ত এতটুকু সুপ্রমাণিত যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম 'আমুল ফিল' তথা হস্তি বাহিনীর মক্কায় আগমনের বছর, রবিউল আউয়াল মাসের[১২] শুরুর দিকের কোনো এক সোমবার ছিল। সুতরাং এখানে আর কোনো সংশয় সৃষ্টির অবকাশ নেই।[১৩] এর আলোচনা সামনে আসছে ইনশাআল্লাহ।
এবার রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মতারিখের আলোচনায় আসা যাক।

#রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম তারিখ:

জন্মতারিখ নির্ণয়ে চারটি বিষয় মুখ্য। বছর, মাস, তারিখ ও বার। ধারাবাহিকভাবে বিবরণগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

★বছর:
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম হয়েছিল 'আমুল ফীল' তথা হস্তী বাহিনীর ধ্বংসের বছর। এটি তৎকালীন বিখ্যাত ঘটনা হওয়ায় এ বছরকে কেন্দ্র করেই আরববা পূর্বাপর সময়ের তারিখ নির্ধারণ করত।[১৪]

হযরত কায়স ইবনু মাখরামা রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
'আমি এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুজনই 'আমুল ফীলে' জন্মগ্রহণ করি।'[১৫]
এ মতকেই অধিকাংশ ঐতিহাসিক ও মুহাদ্দিসগণ গ্রহন করেছেন।

হস্তি-বাহিনীর ঘটনা ও নবিজীর জন্মের মাঝে কতদিনের ব্যবধান, এ ব্যাপারে কয়েকটি মত রয়েছে। ৩০ দিন, ৩৬ দিন, ৪০ দিন, ৫০ দিন, ৫৫ দিন। ইমাম ইবনু কাসীর রহ. ৫০ দিনের মতকে প্রসিদ্ধ আখ্যা দিয়েছেন।[১৬]

কিছু মত রয়েছে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম 'আমুল ফীলের' বা হাতির ঘটনার ১০, ১৫, ২৩, ৩০, ৪০ অথবা ৭১ বছর পর।[১৭]

হাফেজ ইবনু কাসীর রহ. সাহাবিদের থেকে বর্ণিত কয়েকটি বর্ণনার আলোকে এ সকল মতের দালিলিক খন্ডন করেছেন।[১৮]

মোটকথা, অধিকাংশ ঐতিহাসিক ও মুহাদ্দিস মোটামুটি একমত যে,রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম হয়েছিল 'আমুল ফীলে' বা হস্তী বাহিনী আগমনের বছর কোনো এক দিনে।[১৯]

★মাস ও তারিখ:
# ১ম মত: ১২ই রমযান
ইমাম ইবনু আসাকির রহ. বর্ণনা করেন, আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস রাদিআল্লাহু আনহু এবং যুবাইর ইবনু বাক্কার বলেন,
'তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রমযান মাসের বারো তারিখে জন্মগ্রহণ করেন'[২০]
ইবনু কাসীর রহ. থেকেও অনুরূপ বর্ননা রয়েছে। যাতে মা আমেনার গর্ভের সূচনা তাশরিকের হওয়ার কথা বলা হয়েছে এবং সে হিসেবে গর্ভধারণের নয় মাস সম্পন্ন হয় রমযানে।[২১]

# ২য় মত: ৮ই রমযান
সিরাতে হালাবিয়া রচয়িতা আলি ইবনু বুরহান (১০৪৪ হি.) বলেন,
'রমযান মাসের আট তারিখের বর্ণনাটিকে বহু আলেম বিশুদ্ধ বলেছেন।'
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মা আমেনার গর্ভে এসেছিলেন মুহাররম মাসে। আর তাঁর গর্ভকালীন সময় ছিল আট মাস। এতে বোঝা যায় বর্ণনাটি বিশুদ্ধ।[২২]

▪ইবনুল হাজ মালেকী রহ. বলেন,
'রহমত বরকতের মাস রমযানেই তাঁর জন্ম হওয়াটা অধিক সংগত।'[২৩]
তবে ইমাম ইবনু কাসীর রহ. সহ অনেক নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক ও গবেষক এর সাথে দ্বিমত পোষণ করেছেন।

সম্ভবত তাঁরা মাদানি সন অর্থাৎ, বিশুদ্ধ চান্দ্র বর্ষের হিসেবে দ্বিমত পোষণ করেছেন। কেননা মক্কি সন হিসেবে দিনটি হয় রমযান মাসে। আর মাদানি হিসেবে রবিউল আউয়াল মাসে।[২৪] (আল্লাহই ভালো জানেন।)

# ৩য় মত:মুহাররম, সফর অথবা রবিউস সানী
এ মতের পক্ষে মজবুত কোনো দলিল-প্রমান পাওয়া যায় না। তাই এ মতগুলো গ্রহনযোগ্য নয়।[২৫]

# ৪র্থ মত: ১লা রবিউল আউয়াল
ইমাম ফাকেহী রহ. তার সনদে ইবনু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন,
নবিজীর জন্ম ও ইন্তেকাল দুটোই পহেলা রবিউল আউয়াল হয়েছে। কিন্তু এ বর্ণনা অত্যন্ত যয়িফ।[২৬]

# ৫ম মত: ২রা রবিউল আউয়াল
এ মতটি আতা ইবনু আবি রাবাহ (২৭ হি.-১১৪ হি.) ও আবু মাশার মাদানি থেকে সিরাতের ইমাম মুহাম্মদ ইবনু সা'দ (২৩০হি.) ও ওয়াকিদী (২০৭ হি.) বর্ণনা করেন। কিন্তু এই হাদিসটিও মুনকাতি এবং আবু মাশার যয়িফ রাবি।[২৭]

অনেক আলেম, ঐতিহাসিক ও সিরাত রচয়িতা এ মতকে প্রাধান্য দিয়েছেন। এদের মধ্যে,
  • ইমাম আলাউদ্দীন মুগলতায়ি রহ.(মৃ: ৭৬২ হি.),
  • হাফেজ ইবনু হাজার আসকালানি রহ. এর উস্তায হাফেজ যাইনুদ্দীন ইরাকি রহ. (মৃ. ৮০৬ হি.),
  • ইমাম ইবনু আব্দিল বার মালেকী রহ. (মৃ:৪৬৩ হি.),
  • আল্লাহ রাউফ মুনাবি রহ. (মৃ.১০৩১ হি.) উল্লেখযোগ্য।[২৮]

# ৬ষ্ঠ মত: ৮ই রবিউল আউয়াল
এই মতটি বর্ণিত হয়েছে,
  • আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (মৃ: ৬৮ হি.),
  • জুবাইর ইবনু মুতয়িম (মৃ: ৫৮) রাদিআল্লাহু আনহুমা ও
  • ইকরিমা ইবনু আব্দিল্লাহ রহ.[২৯] (জন্ম: ২৫, মৃত্যু: ১০৪ হি.) এবং
  • মুহাম্মাদ ইবনু জুবাইর ইবনু মুতয়িম রহ. (মৃ: ১০০ হি.) থেকে।
অধিকাংশ ঐতিহাসিক, সিরাত গবেষক ও জ্যোতির্বিদগণ এই মতকেই সমর্থন করেছেন এবং এই মতের সমর্থক সবচে বেশি অর্থাৎ, মোট আঠারো জন এই মতকে বিশুদ্ধ বলেছেন।[৩০]

  • ইমাম ইবনু কাসীর রহ. বলেন, এ তারিখই হুমাইদী ইবনু হাযাম থেকে বর্ণনা করেছেন ইমাম মালেক, উকাইল ও ইউনুস ইবনু ইয়াযিদ প্রমুখ। যুহরীসূত্রে মুহাম্মদ ইবনু জুবাইর ইবনু মুতয়িম থেকেও একই মত বর্ণনা করেছেন।[৩১]

  • ইমাম ইবনু আব্দিল বার রহ.(মৃ: ৪৬৩ হি.) এ মতকে বিশুদ্ধ বলেছেন। এ মতকেই অকাট্য রূপে পেশ করেছেন 'হাফেজে কাবীর' খ্যাত মুহাম্মাদ ইবনু মুসা আল খাওয়ারিজমি (৭৮১-৮৪৬ ই.)[৩২] এবং আবুল খাত্তাব ইবনু দিহয়া।[৩৩]

  • এছাড়া আরও যাঁরা এ মতকে গ্রহন করেছেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য,
    *বিখ্যাত ঐতিহাসিক ইবনু মাসউদী (মৃ: ৩৪২ হি.),
    *ইবনুল আসির (মৃ: ৬০৬ হি.),
    *আবুল হাসান ইবনু ফারিস (মৃ: ৩৯৫ হি.),
    *ইবনু হাযম জাহেরী রহ.(মৃ: ৪৫৬),
    *সিরাতে ইবনে হিশামের ব্যাখ্যাকার আব্দুর রহমান আস-সুহাইলী (মৃ: ৫৮১),
    *বিখ্যাত ঐতিহাসিক ইবনুল খতিব,
    *আহমদ ইবনুল হাসান আল মালেকী রহ. (মৃ: ৮১০ হিজরি) ও
    *শায়খ আস'আদ ইবনু মুহাম্মদ আছছাগিরী।[৩৪]

  • এছাড়া আরও যাঁরা এই মতকে অধিকাংশ আলেমের কাছে বিশুদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন তাঁরা হলেন—
    *আবুল আব্বাস ইবনু আব্দুল্লাহ আত তাবারি আল মক্কি রহ. (মৃ. ৬৯৪ হি.),
    *বুখারি শরীফের ব্যাখ্যাকার ইবনু হাজার আসকালানি রহ. (মৃ.৮৫২),
    *ইবনু হাজার হাইতামী রহ. (মৃ. ৯৭৩ হি.),
    *আব্দুল মালিক ইবনু হুসাইন (মৃ. ১১১১ হি.) ও
    *মুহাম্মদ ইবনু আব্দুর রহমান (১১৬৭ হি.)।[৩৫]

# ৭ম মত: ৯ই রবিউল আউয়াল
যেহেতু নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম 'আমুল ফীল' তথা হস্তি বাহিনী ধ্বংসের বছর এটি নিশ্চিত এবং সোমবারের কথা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।[৩৬] তাই এর আলোকে তিন জন জ্যোতির্বিজ্ঞানী গণনা করে দিনটি ৯ই রবিউল আউয়াল বলে উল্লেখ করেছেন।
  • বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী মাহমূদ আহমদ পাশা (মৃ.১৩০২ হি./১৮৮৫ ই.),
  • জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও গবেষক আব্দুল্লাহ আলগওল (ফ্রান্স) এবং
  • মুহাম্মদ ফাইয়্যাজ আলমিছরি[৩৭]

অনেক সিরাত রচয়িতাও এ মতটি গ্রহন করেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য,
  • মাওলানা সুলাইমান মানসূরপুরী রহ. (মৃ.১৯৩০ ই.),
  • মাওলানা শিবলী নুমানি রহ. (মৃ.১৯১৪ ই.)
  • মাওলানা আবুল হাসান আলী নদবী রহ. (মৃ.১৯৯৯ ই.)
  • উসতায খাজরী বেগ রহ. ও (মৃ.১৯২৭ ই.)
  • সফিউর রহমান মেবারকপুরী রহ. প্রমুখ[৩৮]

কিন্তু এই মতের পক্ষে একটি ঐতিহাসিক বর্ণনাও পাওয়া যায় না![৩৯] তাই আলেমগণ ৮ ও ৯ তারিখের মধ্যে সামঞ্জস্যতা করেছেন, যার আলোচনা সামনে আসছে।…

মাওলানা হিফজুর রহমান রহ. (মৃত্যু:১৩৮২হি.) স্বীয় কিতাব “কাসাসুল কুরআন” এ উল্লেখ করেছেন:
“সাধারণদের মধ্যে প্রসিদ্ধ হলো ১২ রবিউল আউয়াল। কিন্তু এর স্বপক্ষে কিছু দুর্বল রেওয়ায়েত রয়েছে। আবার কেউ কেউ ৮ তারিখের কথাও বলেন। কিন্তু সবচেয়ে বিশুদ্ধ ও সনদযুক্ত অভিমত হলো, নবি আলাইহিস সালাম ৯ তারিখ জন্মগ্রহণ করেছেন। এবং হাদিস ও ইতিহাসের প্রসিদ্ধ উলামায়ে কেরামগণ এই মতটিকেই গ্রহণযোগ্য ও বিশুদ্ধ বলে থাকেন। আর হুমাইদি, আক্বিল, ইউনুস বিন ইয়াযিদ, ইবনু আব্দুল্লাহ, ইবনু হাযাম, মুহাম্মাদ বিন মূসা খাওয়ারেযমি, আবু খাত্তাব বিন দিহয়া, ইবনু তাইমিয়া, ইবনু কাইয়ুম, ইবনু কাসীর, ইবনু হাজার আসকালানী ও বদরুদ্দীন আইনী রহ. প্রমুখদের মত বড় বড় আলেমগণ এই মতটিকেই গ্রহণ করেছেন।” (قصص القران ۴/۲۵۳)

আল্লামা সাইয়িদ সুলাইমান নদভি রহ.ও ৯ তারিখ জন্মগ্রহণ করার মতকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। (رحمةٌ للعالمین۱/۳۸-۳۹)

যুক্তির আলোকে কিছু প্রমাণ:
১.মুহাম্মাদ বিন খাওয়ারেযমি রহ. (মৃত্যু:২৩৫হি.) এর মত জ্যোতির্বিদ্যার বিখ্যাত ইমামও ৯ তারিখের মত পেশ করেছেন। যা ওপরে উল্লেখ করা হয়েছে। (رحمةٌ للعالمین۱/۳۸-۳۹)

২. জ্যােতির্বিদ্যার বিখ্যাত ইমাম আল্লামা মাহমুদ পাশা ফালাকি মিসরী রহ. (মৃত্যু:১৩০২হি.) ফারসি ভাষায় تقویم العرب قبل الإسلام এর বিষয়বস্তুর উপর একটি অতুলনীয় কিতাব রচনা করেছেন। এবং আল্লামা আহমাদ যাকি পাশা রহ. (মৃত্যু:১৩৫৩হি.) এর আরবি অনুবাদ করেছেন। যার নাম :
نتائج الأفھام في تقویم العرب قبل الإسلام وفي تحقیق مولد النبي وعمرہ علیہ الصلاة والسلام

এই কিতাবের মধ্যেও প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের প্রসিদ্ধ জ্যােতির্বিদদের সুনিপুণ নিরীক্ষন অনুযায়ী ৯ তারিখ সাব্যস্ত হয়।

তাঁদের বয়ানকৃত কারণসমূহের মধ্যে একটি কারণ কিছুটা এরকম,
‘‘রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবদ্দশায় দশম হিজরীর শাওয়াল মাসের শেষ তারিখে সূর্যগ্রহণ হয়েছিলো। আর ঐ দিন নবি আলাইহিস সালামের পুত্র হযরত ইবরাহিম রা.ও ইন্তেকাল করেন। হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী রহ.ও স্বীয় কিতাব ফাতহুল বারীতে এ কথাটি উল্লেখ করেছেন।” (فتح الباري ۲/۵۲۹)

এই হিসাব অনুযায়ী যদি পেছনের দিন গণনা করা হয় তাহলে রবিউল আউয়াল মাসের ৯ তারিখেই নবি আলাইহিস সালামের জন্ম মোবারক হওয়া সাব্যস্ত হয়। কারণ সোমবার দিন তাঁর জন্ম হওয়ার ব্যাপারে সবাই একমত। আর হস্তি-বাহিনীর ঘটনার বছর রবিউল আউয়াল এর ৯ তারিখেই সোমবার দিন ছিলো।

এক্ষেত্রে আল্লামা মাহমুদ পাশা রহ. এর এবারত এরকম:
وقد اتفقوا جمیعا علی أن الولادة کانت في یوم الإثنین، وحیث إنہ لا یوجد بین الثامن والثاني عشر من ھذا الشھر یوم إثنین سوی الیوم التاسع منہ، فلا یمکن أن نعتبر یوم الولادة خلاف ھذا الیوم․ “সবাই এ ব্যাপারে একমত যে, নবি আলাইহিস সালামের জন্ম সোমবার দিন হয়েছিল। আর তাঁর জন্মের বছরে ৯ তারিখে সোমবার ছিল, ৮ বা ১২ তারিখে নয়। তাই ৯ তারিখ ব্যতিত অন্য কোনো দিনকে জন্মতারিখ ভাবা অগ্রহণযোগ্য।”

এ ব্যাপারে আল্লামা হিফজুর রহমান রহ. এর অভিমত হলো,
“মাহমুদ পাশা ফালাকি-যিনি কুসতুনতুনিয়ার প্রসিদ্ধ জ্যোতির্বিদ ছিলেন- জ্যোতির্বিদ্যা অনুযায়ী যে ফলাফল পেশ করেছেন তা হলো: নবি আলাইহিস সালামের যুগ থেকে আমাদের যুগ পর্যন্ত যদি চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণের সঠিক হিসাব গণনা করা হয় তাহলে পূর্ণ তাহকীকের সাথে এটাই সাব্যস্ত হবে যে, নবি আলাইহিস সালামের জন্ম মোবারক কোনো গণনামতেই সোমবার দিন ১২ তারিখ নয়, বরং ৯ই রবিউল আউয়াল সোমবার দিন ছিলো। তাই সবচেয়ে বিশুদ্ধ সনদ ও জ্যোতির্বিদ্যা অনুযায়ী নবি আলাইহিস সালামের জন্ম তারিখ ৯ই রবিউল আউয়াল।”
—শরয়ি সম্পাদক


# ৮ম মত: ১০ই রবিউল আউয়াল
এই মতটি বর্ণনা করেছেন বিখ্যাত তাবিয়ী শাবী রহ.(জন্ম.২১ ও মৃত্যু.১০৩ হি.) ও মুহাম্মদ ইবনু আলী ইবনুল হুসাইন— আবু জাফর আল বাকের রহ.(জন্ম.৫৬ ও মৃত্যু.১১৮ হি.) থেকে।[৪০]
অনেক ঐতিহাসিক এই মতটিও গ্রহণ করেছেন। তাঁরা হলেন:
  • আহমাদ বালাযুরী রহ. (মৃ.২৭৯)
  • ইবনু জামাআ আল কিনানী রহ. (মৃ.৭৯০),
  • ইমাম ইবনুল জাওযী রহ. (মৃ.৫৯৭),
  • ইমাম শামসুদ্দীন যাহাবী রহ. (মৃ.৭৪৮ হি.),
  • তাফসিরে রুহুল বায়ানের রচয়িতা ইসমাঈল হাক্কী রহ. (মৃ.১১২৪ হি.)[৪১]

# ৯ম মত: ১২ই রবিউল আউয়াল
আব্দুল মালিক ইবনে হিশাম (মৃ.২১৩ হি.) বলেন, মুহাম্মদ ইবনে ইসহাক (মৃ.১৫০ হি.) এ মতটি ব্যক্ত করেছেন।[৪২]

হাকিম নিশাপুরী এবং ইমাম বাইহাকী রহ.ইবনে ইসহাক থেকে এ মত বর্ণনা করেছেন।[৪৩]

কিন্তু মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস বিশ্বকোষ বইয়ের লেখক মাওলানা মুহাম্মদ ইসমাইল রাইহান হাফি.বলেন,
'ইবনু ইসহাকের সিরাতে আমি অনেক খুঁজেও এই বর্ণনা পাইনি। হতে পারে এ বর্ণনা ইবনে হিশাম ও অন্যান্যরা ইবনু ইসহাকের অন্য কোনো কিতাব থেকে নিয়েছেন, যা আমাদের কাছে নেই।'
তিনি আরও বলেন,
'…মোটকথা এ বর্ণনা যয়িফ ও মুনকাতি সাব্যস্ত হয়।'[৪৪]
মাওলানা তাহমীদুল মাওলা হাফি.-ওপ্রায় একই কথা বলেছেন।[৪৫]
এছাড়া ইবনু কাসীর রহ. থেকে একটি বর্ণনা পাওয়া যা ইবনু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। কিন্তু ইবনু কাসীর রহ. নিজেই এ বর্ণনাটি প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং সূত্র বিচ্ছিন্ন বলে উল্লেখ করেছেন। কেননা আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহুর বর্ণনায় ৮ই রবিউল আউয়ালের কথা উল্লেখ আছে। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মতারিখ ও ঈদে মীলাদুন্নবী কিতাবে মাওলানা তাহমীদুল মাওলা হাফি.বর্ণনাটিকে দালিলিকভাবে অগ্রহণযোগ্য প্রমান করেছেন।[৪৬]

মোটকথা, ১২ই রবিউল আউয়ালের পক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য দলিল পাওয়া যায় না এবং নির্ভরযোগ্য সিরাতের গ্রন্থগুলোতেও এই মত বিশুদ্ধ বলে উল্লেখ নেই।

এই মতটি মুহাম্মাদ বিন ইসহাক রহ. (মৃত্যু:১৫১হি.) বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এর কোনো সনদ বর্ণনা করেননি। যদিও এই মতটিই বেশি প্রসিদ্ধ। এবং খোদ পবিত্র মক্কাতেও নবি আলাইহিস সালামের জন্ম উপলক্ষে বিভিন্ন জলসা এই তারিখেই হয়ে থাকে। এমনকি সারা দুনিয়াতেও এই উপলক্ষে বিভিন্ন মাহফিল-মাজালিস এই তারিখেই অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সঠিক রেওয়ায়েত অনুযায়ী এই তারিখে নবি আলাইহিস সালামের জন্ম মোবারক সাব্যস্ত নয়। একটু লক্ষ করে দেখুন ইমাম হাকিম রহ. (মৃত্যু:৪০৫হি.) এর কিতাব মুসতাদরাকের রেওয়ায়েত:

أخبرنا أبو الحسن محمد بن أحمد بن شبویہ بمرو، ثنا جعفر بن محمد النیسابوري، ثنا علي بن مھران، ثنا سلمة بن الفضل عن محمد بن إسحاق قال: ولد رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم لاثنتي عشرة لیلة مضت من شھر ربیع الأول․ (المستدرک علی الصحیحین للحاکم، رقم: ۴۱۸۳)

কিন্তু এই রেওয়ায়েতটিও মুত্তাসিল সনদ না থাকার দরুন গ্রহণযোগ্য নয়। এবং এই মতটি সনদবিহীন মতের মতই অগ্রহণযোগ্য—(শরয়ি সম্পাদক)


এজন্য মাওলানা তাহমীদুল মাওলা হাফি. বলেন,
'হাজার-বারো শ বছরের ইতিহাসে নির্ভরযোগ্য কোনো ঐতিহাসিক বা সিরাতের ইমাম,…, এ মতটিকে শাস্ত্রীয়ভাবে বিশুদ্ধ বলেছেন বা এ মতের পক্ষে যৌক্তিকতা তুলে ধরে প্রমাণ করার চেষ্টা করে সফল হয়েছেন বলে আমাদের জানা নেই।'[৪৭]
তিনি আরও বলেন,
'১৪শ বছরের ইতিহাসে রচিত সিরাত ও ইতিহাসের শত-শত কিতাব মন্থন করার পরও আমরা কোনো নির্ভরযোগ্য ইমাম বা মুহাদ্দিসকে ১২ তারিখের মতটিকে বিশুদ্ধ বা নির্ভরযোগ্য বলতে দেখিনি।'[৪৮]
★জন্মের বার:
সময় নিয়ে মতপার্থক্য থাকলেও জন্মের বার সোমবার এ সম্পর্কে কারও কোনো দ্বিমত নেই। কেননা এটি বিশুদ্ধ সূত্রে সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমানিত।

'…সোমবারের সওম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
"এ দিন আমি জন্মলাভ করেছি এবং এ দিনই আমি নুবুওয়াতপ্রাপ্ত হয়েছি বা আমার উপর (কুরআন) নাযিল করা হয়েছে।"'[৪৯]

★৮ ও ৯ই রবিউল আউয়ালের মধ্যে সামঞ্জস্যতা:
জ্যোতির্বিজ্ঞানে পারদর্শী ও বিখ্যাত গবেষক মাওলানা মুফতি রশিদ আহমদ রহ.বলেন,
'সর্বসম্মত মতে নবিজী সা.-এর জন্ম হয়েছিল সোমবার। আর হিসেবের আলোকে দেখা যায়, সোমবার হয় রবিউল আউয়ালের ২ এবং ৯ তারিখ। আর আট তারিখের বর্ণনা করেছেনইবনু আব্বাসওজুবাইর ইবনু মুতয়িম রাদিয়াল্লাহু আনহুমা। অধিকাংশ মুহাদ্দিস এ মতটি গ্রহণ করেছেন। (গণনায় যে ৯ তারিখ দেখা যায় সম্ভবত এটি আট হবে। কেননা,) গণনার ক্ষেত্রে এক দিনের পার্থক্য হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক।'[৫০]
বিগত শ্বতাব্দীর বিখ্যাত মুহাদ্দিস ও হানাফি আলেম আল্লামা যাহেদ কাউসারী রহ.(মৃ.১৩৭১ হি.) যা বলেন তার সারাংশ হলো-তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জন্ম হয়েছিল ৮ রবিউল আউয়াল দিবাগত রাতে। আর এটিই জ্যোতির্বিদদের হিসেবে ৯ই রবিউল আউয়াল।[৫১]

সারকথা:

ওপরের আলোচনার মাধ্যমে যে বিষয়গুলো প্রতিয়মান হয় তার সারসংক্ষেপ হলো:

◾নির্ভরযোগ্য বর্ণনামতে এ কথা সুপ্রমানিত যে,নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম হয়েছিল 'আমুল ফীল' অর্থাৎ হস্তি-বাহিনীর মক্কায় আক্রমনের বছর। আর এই বছর ঈসায়ি (খ্রিষ্টাব্দ) সন অনুযায়ী ৫৬৯ সাল হয়। যেমনটি লিখেছেন ইতিহাস বিশ্বকোষ বইয়ের লেখক মাওলানা মুহাম্মাদ ইসমাইল রাইহান হাফি.[৫২]

◾ জন্মের বার ছিল সোমবার। যা সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমানিত।[৫৩]

◾ রবিউল আউয়ালের ১২ তারিখ প্রসিদ্ধ হলেও বিশুদ্ধ হল ৮ বা ৯ই রবিউল আউয়াল।২ অথবা দশ তারিখ হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।তবে ১২ তারিখ সবচেয়ে দুর্বল ও অগ্রহনযোগ্য।এই তারিখ মাদানি চান্দ্রবর্ষ (যা বিশুদ্ধ চান্দ্রবর্ষ ছিল) অনুযায়ী। তবে মাওলানা মুহাম্মাদ ইসমাইল রাইহান হাফি. সকল মত বর্ণনার পর ৮ই রবিউল আউয়ালকে প্রাধান্য দিয়েছেন।[৫৪] আমরাও ৮ রবিউল আউয়াল ধরে নিচ্ছি।

◾মাদানি হিসেবে রবিউল আউয়াল হলেও মাক্কি চান্দ্রবর্ষ (যা বিকৃত চান্দ্রবর্ষ ছিল) হিসেবে তা রমযান মাস ছিল।ফলে রবিউল আউয়াল ও রমযান মাস উভয় বর্ণনাই সঠিক।মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস বিশ্বকোষ বইয়ের লেখক মাওলানা ইসমাইল রাইহান হাফি. বিশ্লেষণপূর্বক এ মতামতই ব্যক্ত করেছেন।[৫৫]

◾আর ঈসায়ি সন অনুযায়ী দিনটি ১৩ই মে হয়।[৫৬]



উপরিউক্ত আলোচনায় যা পেলাম:

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম:
ঈসায়ি সন: ১৩ মে ৫৬৯ ঈসায়ি সোমবার
মাক্কী সন: ৮ রমজান
মাদানি সন: ৮ রবিউল আউয়াল
মাদানি সন মোতাবেক হিজরতপূর্ব ৫৫ বছর এবং মক্কি সন মোতাবেক হিজরতপূর্ব ৫৩ বছর ৪ মাস।[৫৭]



আরেকটি বিষয় এখানে প্রণিধানযোগ্য যে, ১২ই রবিউল আউয়াল রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম কি না তা নিয়ে মতভেদ থাকলেও (এমনকি অধিকাংশের মতে অনির্ভরযোগ্য), মৃত্যুর তারিখ যে ১২ই রবিউল আউয়াল সে বিষয়ে অধিকাংশ ঐতিহাসিকই একমত।[৫৮] তাই যারা ১২ই রবিউল আউয়ালকে নিশ্চিতরূপে ধরে নিয়ে এদিন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভালোবাসা প্রকাশে বিভিন্ন উৎসব করে থাকেন তাদের বিষয়টা নিয়ে ভাবা উচিত।[৫৯]

◾সম্পাদনা: মুফতি তানজিল আরেফিন আদনান হাফি.
◾সংকলন: রিদওয়ান নাবিল
◾ছবি ডিজাইন: তানজিমুল ইসলাম ত্বহা

  • [১]আশ শামারীখ: পৃ.১১, ১৫
    [সূত্রে মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস বিশ্বকোষ, মাওলানা ইসমাইল রাইহান, খ.১, পৃ.৫০-৫১ (মাকতাবাতুল আযহার)]
    আল্লামা সুয়ুতি রহ. ইবনু শিহাব যুহরির সূত্রে একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন, যা দ্বারা জানা যায় যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় হিজরতের পর বর্ষ-গণনার সূচনা হিজরতের সময় থেকে করার আদেশ দিয়েছিলেন। এমনকি আল্লামা সুয়ুতি রহ. রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি চিঠির কথাও উল্লেখ করেছেন, যাতে নবিজির পক্ষ থেকে পঞ্চম হিজরি লিপিবদ্ধ থাকার ব্যাপারটা প্রমাণিত। সুয়ুতি রহ.বলেন, 'এর দ্বারা বোঝা যায়, হিজরি সনের প্রবর্তক রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আরউমর রাদিআল্লাহু আনহুতাকে অনুসরণ করেছেন।'
    [দেখুন: আশ শামারীখ, পৃ.১২, ১৪; তারিখে তাবারি: ২/২৮৮; সূত্রে মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস বিশ্বকোষ, মাওলানা ইসমাইল রাইহান, খ.১, পৃ.৫০ ]
  • [২] আততারিখুল কাবীর, ইমাম বুখারি, ১/১০; তারিখে তাবারি, ২/৪; ফাতহুল বারি, ইবনু হাজার রহ., ৬/৩২০-৩২২; তারিখুল ইসলাম, যাহাবি রহ., ১/৩৯৪;
    সূত্রে নবীজির (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মিলাদুন্নবী, পৃ.৪৯
  • [৩] ঈসায়ি সাল বা খ্রিষ্টীয় সনের গণনা নবিজির জন্মের প্রায় ৫৬৯ বছর আগে থেকে ঈসা আলাইহিস সালামের জন্মের বছর থেকে।
    দেখুন: নবীজির (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মিলাদুন্নবী, পৃ.৪৯
  • [৪] তাফসিরে রাযি: ১৬/৪০-৪১; আল-মুজামুল আওসাত লিত তবারানি: হাদিস- ২৯০৯; আস-সীরাতুল হালাবিয়্যাহ: ৩/৩৬০; তাফসিরে তাবারি: ১১/৪৫৪
    [সূত্রে মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস বিশ্বকোষ, মাওলানা ইসমাইল রাইহান, খ.১, পৃ.৫২]
    নবীজির (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মিলাদুন্নবী, পৃ.৫২
  • [৫] সূরা তাওবা: ৩৬-৩৭
  • [৬] তারিখে তাবারি, ২/৪; [সূত্রে নবীজির (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মিলাদুন্নবী, পৃ.৪৯]
  • [৭] তাকবিমে তারীখী- মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, পৃ.১৮
    [সূত্রে মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস বিশ্বকোষ, মাওলানা ইসমাইল রাইহান, খ.১, পৃ.৫৩-৫৪]
  • [৮] মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস বিশ্বকোষ, মাওলানা ইসমাইল রাইহান, খ.১, পৃ.৫৪
  • [৯] নবীজির (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মিলাদুন্নবী, পৃ.৫২
  • [১০] নবীজির (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মিলাদুন্নবী, পৃ.৫৬
  • [১১] নবীজির (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মিলাদুন্নবী, পৃ.৫৬
  • [১২] এই মাস মাদানি সন হিসেবে। আর বিকৃত চান্দ্রবর্ষ (মক্কি সন) হিসেবে ছিল রমযান মাস।
    দেখুন: মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস বিশ্বকোষ, মাওলানা ইসমাইল রাইহান, খ.১, পৃ.১৮৯
  • [১৩] নবীজির (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মিলাদুন্নবী, পৃ.৫৭
  • [১৪] তারিখে তাবারি, ২/৪; সূত্রে নবি (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মিলাদুন্নবী, পৃ.৫৯
  • [১৫] সুনানুত তিরমিজি, হা: ৩৯৭৯/ ৩৬১৯;
    তারিখুল ইসলাম, ইমাম যাহাবী, ১/২৩;
    [সূত্রে প্রগুক্ত]
  • [১৬] আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৩/৩৮০;
    সূত্রে মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস বিশ্বকোষ, মাওলানা ইসমাইল রাইহান, খ.১, পৃ.১৮৭।

    আত-তাবাকাতুল কুবরা, ১/৮১; তারিখুল ইসলাম, যাহাবি, ১/২৭; সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ১/৩৩৬;
    [সূত্রে নবীজির (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মিলাদুন্নবী, পৃ.৬০-৬১]
  • [১৭] তারিখে দিমাশক, ইবনু আসির, ৩/৭৬; সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ১/৩৩৬; আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ২/২১৯;
    [সূত্রে নবিজীর (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মিলাদুন্নবী, পৃ.৫৯]
    মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস বিশ্বকোষ, মাওলানা ইসমাইল রাইহান, খ.১, পৃ.১৮৭
  • [১৮] আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৩/৩৮০
    [সূত্রে মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস বিশ্বকোষ, মাওলানা ইসমাইল রাইহান, খ.১, পৃ.১৮৭]
    তারিখুল ইসলাম, সিয়ারু আলামিন নুবালা- ইমাম যাহাবী রহ., ১/১৫০
  • [১৯] নবীজির (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মিলাদুন্নবী, পৃ.৬১;
  • [২০] তারিখে দিমাশক, ৩/৬৬; আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ১/২২০, তারিখুল ইসলাম, যাহাবী, ১/২৩;
    [সূত্রে নবীজির (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মীলাদুন্নবী, পৃ.৬১]
  • [২১] আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৩/৩৭৬; সনদের দিক দিয়েও হাদিসটি নির্ভরযোগ্য। [সূত্রে মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস বিশ্বকোষ, মাওলানা ইসমাইল রাইহান, খ.১, পৃ.১৯০]
  • [২২] সীরাতে হালাবিয়া, ১/১২৫; আর রাউযুল উনুফ, ১/২৪২; সূত্রে প্রাগুক্ত।

    উল্লেখ্য: নবীজি (ﷺ) মুহাররমে মায়ের গর্ভে আসা এবং রমযানের ১২ তারিখ জন্মগ্রহণ করার যে বর্ণনা রয়েছে তার সনদে দুজন রাবি যয়ীফ। মুহাম্মাদ বিন উসমান ও মুসাইয়াব বিন শারীক। দেখুন: মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস বিশ্বকোষ, মাওলানা ইসমাইল রাইহান, খ.১, পৃ.১৯০ (টীকা দ্র.)
  • [২৩] আল-মাদখাল, ২/৫; [সূত্রে নবীজির (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মীলাদুন্নবী, পৃ.৬২]
  • [২৪] মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস বিশ্বকোষ, মাওলানা ইসমাইল রাইহান, খ.১, পৃ.১৯০ (২নং টীকা দ্র.); খ.২, পৃ.১১৯
  • [২৫] আস সিরাতুল হালাবিয়া, ১/১২৫; [সূত্রে নবীজির (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মীলাদুন্নবী, পৃ.৬২]
  • [২৬] আখবারু মাক্কাহ, ৩/৩৮৪; [সূত্রে মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস বিশ্বকোষ, মাওলানা ইসমাইল রাইহান, খ.১, পৃ.১৯০]
  • [২৭] তাবাকাতুল কুবরা, ১/৬৭; আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ১/২১৯;
    মুনকাতি (منقطع) হাদিস: যে হাদিসের সনদে ধারাবাহিকতা রক্ষিত হয় নি, মাঝখানে কোন এক স্তরে কোন রাবীর নাম বাদ পড়েছে, তাকে মুনকাতি হাদিস, আর এই বাদ পড়াকে ইনকিতা বলা হয়।
    দেখুন: www.hadithbd.com/...
  • [২৮] সিরাতে হালাবিয়া, ১/১২৫; আল ইসতিআব, ১/১১; মুখতাছারুস সিরাহ লি মুগলাতায়, পৃ.১৭;
    আলফিয়াতুল ইরাকি ফিসসিরাহ, পৃ.২;
    তাহযীবুল কামাল ফি আসমাইর রিজাল;
    আল উজালাতুস সানিয়্যাহ, পৃ.৫২;
    [সূত্রে নবীজির (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মীলাদুন্নবী, পৃ.৬৩-৬৫]
  • [২৯] ইকরিমা রহ. বিখ্যাত তাবেয়ী এবং আব্বাস রা. এর বিশিষ্ট শিষ্য। তিনি বিশেষভাবে তাফসির ও সিরাতের ইমাম ছিলেন। কাতাদা রা. থেকে বর্ণিত তাবেয়ীদের মধ্যে নবীজির সিরাত সম্পর্কে তিনি সবচেয়ে বেশি জানতেন। [দেখুন: সিয়ারু আলামিন নুবালা, ইমাম যাহাবী- ইকরিমাচরিত]
  • [৩০] জামিউল আসার, ২/৪৯৭; আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ২/২১৯ (৩/৩১, দারু ইবনে কাসীর);
    [সূত্রে নবীজির (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মীলাদুন্নবী, পৃ.৬৬] প্রাগুক্ত, পৃ.৮২
  • [৩১] আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, তাহকিক- তুরকী, ৩/৩৭৫ (৩/৩১ দারু ইবনে কাসীর); সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ১/৩৫৭ [সূত্রে নবীজির (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মীলাদুন্নবী, পৃ.৬৭]
  • [৩২] আবু আব্দুল্লাহ্ মুহাম্মাদ ইবনে মুসা আল-খাওয়ারিজমি (ফার্সি উচ্চারণ: খাওয়ারেজমি) (১৬৪-২৩২ হি./৭৮১-৮৪৬ ই.) মধ্যযুগীয় মুসলিম বিজ্ঞানীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের দাবীদার। তিনি ছিলেন একাধারে গণিতজ্ঞ, ভূগোলবিদ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী।
    দেখুন: মুসলিম জাতি বিশ্বকে কি দিয়েছে, ড. রাগিব সারজানি, ২/২৪৫ ও উইকিপিডিয়া
  • [৩৩] ৩১ নং টীকা এবং আল ইসতিআব, ১/১১; আল-বিদায়া, ২/২১৯; জামিউল আসার, ২/৪৯৬-৫১০; আলআলাম, যিরিকলী- খাওয়ারিজমি পরিচিতি, ৭/১১৬;
  • [৩৪] মুরুজুয্ যাহাব, ১/২৭৯; উসদুল গাবাহ, ১/৮; জামিউল আসার, ইবনে নাসিরুদ্দিন দিমাশকী, ২/৪৯৬-৫১০; আর রাউযুল উনুফ, ২/১৫৬; আস সিরাতুল হালাবিয়াহ, ১/১২৪-১২৫; আল বিদায়া, ২/২১৯; ওয়াসিলাতুল ইসলাম বিন্নবিয়্যি আলাইহিস সালাম, পৃ.৪৪; আল উসওয়াতুন হাসানাহ,পৃ.১১৪
    [সূত্রে নবীজির (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মীলাদুন্নবী, পৃ.৬৭-৬৮]
  • [৩৫] খুলাছাতু সিরায়ি, পৃ.২৩;
    জামিউল আসার, ইবনে দিমাশকী,
    ২/৪৯৬-৫১০; সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ১/৩৩৬; আলইলাম বিফতাওয়া আইম্মাতিল ইসলাম হাওলা মাউলিদিহি আলাইহিস সালাম, পৃ.২৬৯; মাউলিদুন্নবী (ﷺ)., পৃ.৮৯ (মুদ্রন: দারুস সাহাবা, ১৪১১ হি.);
    দিওয়ানুল ইসলাম, ১/২০ (মুদ্রন: দারুল কুতুবিল ইলমিয়া, ১ম ১৯৯০ ই.);
    [সূত্রে প্রাগুক্ত, পৃ.৬৮-৭০]
  • [৩৬] সহিহ মুসলিম, হা: ২৬৩৭
  • [৩৭] নাতাইযুল আফহাম, মাহমুদ পাশা; আত্তাকাওয়াম, মুহাম্মদ ফাইয়্যাজ মিছরি; [সূত্রে প্রাগুক্ত, পৃ.৭৩]
  • [৩৮] রাহমাতুল লিল আলামিন, ১/৪০;
    সিরাতুন নবী (ﷺ), ১/১০৫;
    আস সিরাতুন নাবাবিয়্যাহ, পৃ.১১২;
    নূরুল ইয়াকিন ফি সিরাতি সায়্যিদিল মুরসালিন, পৃ.৯;
    [সূত্রে প্রাগুক্ত, পৃ.৭৪]
    আর রাহিকুল মাখতুম, পৃ.৮১ (তাওহিদ পাব: ফেব্রু:, ২০১৮);
  • [৩৯] নবীজির (সা.) জন্মতারিখ ও ঈদেমীলাদুন্নবী, পৃ.৭৫
  • [৪০] তারিখে দিমাশক, ৩/৭৫; আল- বিদায়া, ১/২১৯; তারিখুল ইসলাম, যাহাবী, ১/২৭; তবাকাতে ইবনে সাদ [সূত্র প্রাগুক্ত, পৃ.৭৬]
  • [৪১] আনসাবুল আশরাফ, ১/৩৯;
    মুখতাছারুস সীরাহ লিল কিননী, পৃ.২২;
    আল মুনতাযাম ফিত তারিখ, ২/১৫৩;
    তারিখুল ইসলাম, ১/২৭;
    সিয়ারু আলামিন নুবালা, ১/১৪৯-১৫০;
    তাফসিরে রুহুল বায়ান, ২/৩০০;
    [সূত্র প্রাগুক্ত, পৃ.৭৬-৭৭]
  • [৪২] সিরাতে ইবনে হিশাম, ১/১৪৬; [সূত্র প্রাগুক্ত, পৃ.৭৭]
  • [৪৩] আল মুসতাদরাক, ২/৭০৮, হা.৪২৪১; শুআবুল ইমান, হা.১৩৮৭; [সূত্র প্রাগুক্ত, পৃ.৭৮]
  • [৪৪] মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস বিশ্বকোষ, মাওলানা ইসমাইল রাইহান, খ.১, পৃ.১৮৯-১৯০
  • [৪৫] সিরাতে ইবনে ইসহাক, ১/৯৯, দারুল কুতুবিল ইলমিয়া, আহমদ ফরীদী; সিরাতে ইবনে ইসহাক, ১/২৫ ড. মুহাম্মদ হামীদুল্লাহ সম্পাদিত;
    নবীজির (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মীলাদুন্নবী, পৃ.৭৫;
  • [৪৬] আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৩/৩২ দারু ইবনে কাছীর;
    নবীজির (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মীলাদুন্নবী, পৃ.৮৩-৮৭;
  • [৪৭] নবীজির (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মীলাদুন্নবী, পৃ.৭৯;
  • [৪৮] নবীজির (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মীলাদুন্নবী, পৃ.৮০;
  • [৪৯] সহিহ মুসলিম, হা: ২৬৩৭,
    সহিহ মুসলিম, হা: ২৬৪০
  • [৫০] আহসানুল ফাতাওয়া, ২/৩৬৮;
    [সূত্রে নবীজির (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মীলাদুন্নবী, পৃ.৭৫]
  • [৫১] মাকালাতে কাউসারী, পৃ.৩৬৩
    [সূত্রে প্রাগুক্ত]
  • [৫২] মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস বিশ্বকোষ, মাওলানা ইসমাইল রাইহান, খ.১, পৃ.১৯১; খ.২, পৃ.১১৯**
  • [৫৩] সহিহ মুসলিম, হা: ২৬৩৭,
    সহিহ মুসলিম, হা: ২৬৪০
  • [৫৪] মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস বিশ্বকোষ, মাওলানা ইসমাইল রাইহান, খ.২, পৃ.১১৯**
  • [৫৫] মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস বিশ্বকোষ, মাওলানা ইসমাইল রাইহান, খ.১, পৃ.১৯১; খ.২, পৃ.১১৯**
  • [৫৬] প্রাগুক্ত
  • [৫৭] মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস বিশ্বকোষ, মাওলানা ইসমাইল রাইহান, খ.২, পৃ.১১৯**
  • [৫৮] সহিহ বুখারি, হা: ১৩৮৭;
    আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৩/৩৭৫
    প্রাগুক্ত, পৃ.৭৩-৭৪ (২ নং টীকা দ্র.)
  • [৫৯] ঈদে মিলাদুন্নবি সম্পর্কে জানতে দেখতে পারেন:
    ▪️নবীজির (ﷺ) জন্মতারিখ ও ঈদে মিলাদুন্নবী, পৃ.৯২-১৩৫;
    ▪️মীলাদ কিয়াম, ঈদে মীলাদুন্নবী ও জশনে জুলুস, শাইখুল হাদিস মুফতী মনসূরুল হক দা.বা., islamijindegi.com অথবা, darsemansoor.com
    ▪️ দুটি ভিত্তিহীন বর্ণনা, মাসিক আল-কাউসার, অক্টোবর-২০২১, পৃ.৪২